কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগে সয়লাব হয়ে গেছে। চাল, ডাল, আটা, সুজি ও কাঁচাবাজারসহ সর্বত্রই অবাধে চলছে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব অবৈধ পলিথিন ব্যাগ আমদানি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে দূষিথ হচ্ছে পরিবেশ, ক্ষতি হচ্ছে কৃষি জমির।
গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) কাশিয়ানী উপজেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র রামদিয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ৫৮৬ কেজি পলিথিন জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় তিন ব্যবসায়ীকে ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাসেল মুন্সী এ অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান, উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান জানান, অবৈধ পলিথিন বিক্রির অপরাধে পরিবেশ আইনে ওই বাজারের মুদি ব্যবসায়ী অপু সাহাকে ২৫ হাজার, জীবন সাহাকে ২০ হাজার টাকা জরিমাণা করা হয়। পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যবাধকতা আইনে মুদি ব্যবসায়ী মঙ্গল বিশ্বাসকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা জানান, গত ১ নভেম্বর থেকে আমাদের পলিথিন বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। যা নিয়মিত চলবে।
জানা গেছে, পলিথিন ব্যাগ পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে, ড্রেনে পানি নিষ্কাষণে সমস্যার সৃষ্টি করে। এমনকি পলিথিন ব্যাগ বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ। এ সকল ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে ২০০২ সালে মার্চে সরকার কর্তৃক সকল প্রকার শপিং পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, বিক্রয়, প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, পরিবহন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। অথচ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকে ডগায় দেদারছে বিকি হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। এক শ্রেণির কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা আমদানি করছে এসব পলিথিন ব্যাগ। সর্বশেষ গত ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারে পলিথিন ও পলিপ্রোপাইলিন ব্যাগের ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
সরেজমিনে উপজেলা সদরসহ ভাটিয়াপাড়া, রামদিয়া, তারাইল, জয়নগর, রাহুথড়, রাজপাট, সাজাইল, ঘোনাপাড়া এবং তিলছড়াসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পলিথিন ব্যাগ বিক্রি ও ব্যবহার আইনত নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও এসব বাজারে পলিপ্রোপাইল, পলিইথাইল, এইচডিপি নামের বিষাক্ত পলিথিন ব্যাগ প্রকাশ্যে বিক্রি এবং মুদি দোকান, কাঁচাবাজারে, হোটেল-রেস্তোরা, মাছ ও মাংস বাজারে ব্যবহার হচ্ছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করতে হচ্ছে বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা।
-লিয়াকত হোসেন লিংকন